বই: হিমু রিমান্ডে
লেখক: হুমায়ুন আহমেদ
হিমু সিরিজটা আমি কতবার পড়ে শেষ করেছি বলে বুঝানো যাবেনা। যতবারই পড়তে ধরি মনে হয় যেন নতুন করে পড়ছি। এই সিরিজের অন্যতম বেস্ট হচ্ছে “হিমু রিমান্ডে”।
ভয়ংকর এবং কুখ্যাত খুনী আয়না মজিদকে ভেবে ভুলবশত হিমুকে গ্রেফতার করে ধরে আনা হয়েছে থানায়। তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশ অফিসার কবির সাহেব হিমুকে সন্ত্রাসী আয়না মজিদ ভেবে জবানবন্দি নিচ্ছেন। কিন্তু বরাবরের মত হিমু হাস্যরসাত্মক কান্ড কারখানা চালিয়ে যাচ্ছে। কবির সাহেব বিরক্ত বোধ করলেও একটা পর্যায়ে হিমুর প্রতি সম্মোহিত হয়ে যান অতঃপর হিমুকে সিঙ্গারা এবং চা খেতে দেন। তারপর হাত কড়া খুলেই বাহিরে চলে যান। এদিকে সুযোগ পেয়ে হিমু সাহেব পালিয়ে যায়। কিন্তু পালিয়ে দূরে কোথাও যায়না। একেবারে কবির সাহেবের বাড়িতেই যেয়ে ওঠে। ফোনে কথা বলে কবির সাহেবের স্ত্রী শোভাকে রীতিমতো বোন বানিয়ে ফেলে হিমু। আর আহ্লাদে গদগদ হওয়া মিসেস শোভাও সম্মোহিত হয়ে হিমুকে ফোনে দাওয়াত দিয়ে বসে।
হিমু রিমান্ড বইয়ের অন্যতম ভাল লাগার চরিত্র “হাবীব এন্ড সন্স” মিষ্টির দোকানের মালিক হাবিব ভাই। প্রতিটি হিমু পর্বে এরকম একজন ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার থাকবেই। এই হাবীব ভাইয়ের বিশ্বাস হিমু তাকে ফুঁ দিয়ে দিলেই তার ঘরে সন্তান আসবে। কিন্তু ফুঁ দিয়ে দেয়না বলে তার মনে বড্ড অভিমান। অবশেষে তার মনের আশা পূরণ করে দেয় হিমু।
হিমুকে দু চোখে দেখতে না পারা খালু একটা বিশেষ কাজে হিমুকে খোঁজ করে। আর বিশেষ কাজটি হলো হিমুকে স্বয়ং গল্পের শুরুতে উল্লেখ করা কুখ্যাত সন্ত্রাসী আয়না মজিদের মুখোমুখি হতে হবে খালুর কাছে মজিদের দাবী করা চাঁদার টাকা পৌঁছে দেয়ার জন্য। আর এখান থেকেই মূল গল্পে শুরু। আয়না মজিদকে প্রথমবারের মত দৃশ্যপটে হাজির হতে দেখা যাবে এখানেই।
বাকি রইলো হিমুর কাজিন বাদলের পাগলামি। আর টাইগার নামক এক কুকুরকে খুঁজে পাওয়া। সব মিলিয়ে খুব উপভোগ্য একটি উপন্যাস।
এই উপন্যাসের সারকথা হচ্ছে মানুষের প্রতিশোধের চেয়ে প্রকৃতির প্রতিশোধ হচ্ছে সবচেয়ে নির্মম। আর এই প্রতিশোধের স্বাদ হিমু আয়না মজিদকে আস্বাদন করায়। আয়না মজিদ তার কৃতকর্মের ফল অবশেষে পেয়েই যায় হয়ত সেটা হিমুর দ্বারা অথবা প্রকৃতির দ্বারা। কিন্তু হিমু এটাকে প্রাকৃতিক প্রতিশোধ বলেই বিবৃতি দিয়েছে। প্রকৃতি বরাবরই রহস্যময়। তানাহলে চালচুলো হীন এক যুবকের(হিমু) সামনে কিভাবে এক কুখ্যাত এক সন্ত্রাসী পরাভূত হয়ে পরে সেটার বিস্তারিত উপাখ্যান জানতে পড়ুন “হিমু রিমান্ডে” ।
This post was created with our nice and easy submission form. Create your post!
Comments
0 comments