*** পোশাক মানুষের অন্যতম একটি মৌলিক চাহিদা। সভ্যতার সূচনালগ্নে মানুষ যখন সভ্য হওয়ার প্রথম সিড়িতে পা রাখলো তখন থেকেই তারা নিজেদের লজ্জা নিবারণের ব্যাপারে বেশ সচেতন হয়ে উঠলো। এবং সেটারই ধারাবাহিকতায় নিজেদের লজ্জা নিবারণের কাজে তারা প্রথমে গাছের পাতা ও বাকল এবং পশুর চামড়া ব্যবহার করতে শুরু করে।
সেই থেকেই পোশাক নামক এই মৌলিক চাহিদাটির সাথে মানুষের আঙ্গিক বসবাস শুরু। কালের পরিক্রমায় পোশাকের ধারণা বারবার পরিবর্তিত হতে দেখা গিয়েছে। একেক যুগে একেক রকমের পোশাকের ধরণ এবং শৈলী আমরা ইন্টারনেট ঘাটলে দেখতে পারি। যুগে যুগে মানুষের ড্রেসিং সেন্স পরিবর্তিত হয়েছে। একটি যুগে বাজিমাৎ করা পোশাক পরবর্তীতে সেকেলে হয়ে যেতেও দেখা গিয়েছে।
কিন্তু পোশাকের সঙ্গে মানুষের যেই মেলবন্ধন এটা কিন্তু বন্ধ হয়ে যায়নি। সভ্য মানুষ মানেই সুন্দর রুচি। আর সেই সুন্দর রুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটে মানুষের পোশাক দ্বারা। পোশাকের ধরনে ভিন্নতা আনতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার এবং ফ্যাশন ডিজাইনাররা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। আধুনিক যুগে এসে কাস্টোমাইজড পোশাকের ধারণাও এসেছে। অর্থাৎ ব্যক্তি তার নিজস্ব অভিরুচি অনুযায়ী পোশাক তৈরি করিয়ে নিতে পারবেন। উন্নত, স্বল্পোন্নত এবং অনুন্নত প্রায় সব দেশই পোশাকের ব্যাপারে বেশ সচেতন। পোশাক শিল্পে আমাদের দেশ বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। উন্নত দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানীতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।
একজন বাংলাদেশী হিসেবে ব্যাপারটা গর্ব করার মতই। বিশ্বের বড় বড় পোশাক এবং এক্সেসোরিজ ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের গার্মেন্টসগুলো থেকেই কাজ করিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। এতো গেল বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। এবার আসা যাক দেশের ভিতরে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হিসেবে মেয়েদের ব্যবহার্য শাড়ি এবং ছেলেদের ব্যবহার্য লুঙ্গি সারা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। এছাড়াও বাঙ্গালীদের অন্যান্য পোশাকের ব্যাপারেও বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশ থেকেও অনেক এগিয়ে। পোশাক নিয়ে দেশের ভিতরেও অনেক কাজ হচ্ছে।
*** ডিজিটাল মার্কেটিং-এর যুগে অনেকেই বেকার বসে না থেকে স্বল্প পুঁজি নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ে নেমে পরেছে। জবের পিছনে না দৌড়িয়ে, কোনো কিছু না করার চাইতে অন্তত এভাবে উদ্যোক্তা হওয়াটাকেই তারা বেছে নিচ্ছে। করোনা পরবর্তীকালীন সময়ে দেশের নারী এবং পুরুষ উভয়ের মাঝে এভাবে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতাটা খুব বেশী বেড়েছে। অনেক অনেক আইটেমের মাঝে অনলাইনে পোশাকের ব্যবসাটা বেশ এগিয়ে। ফেইসবুকের নিউজফিড স্ক্রল করলেই অন্তত ৪-৫ টা বুটিক হাউজের পেইজের দেখা মেলে৷ এবং এক্ষেত্রে নারীরা বেশ এগিয়ে।
নারী সমাজের অভিরুচি খুব বেশী ভাল হওয়ায় নারীরা পোশাক, কসমেটিক্স এবং অলংকারের ব্যবসায়ে ঝুঁকছে। এভাবে উদ্যোগী হওয়ার ব্যাপারটা দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই ইতিবাচক। বাংলাদেশ ছোট্ট একটি দেশ হওয়ায় এখানে চাকরির সুযোগটাও খুবই কম। ঠিক এই কারণে ঘরে ঘরে উদ্যোক্তা গড়ে উঠছে। ব্যাপারটা খুবই আশাব্যঞ্জক। ই-বিজনেসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী প্রভাব রেখেছে পোশাক আইটেমের অনলাইন ভিত্তিক ফেইসবুক পেইজগুলো। বিক্রিও হচ্ছে দেদারসে।
অন্তত ১০ টি পেইজ এবং পেইজের রিভিউগুলো ঘেটে এমনটাই মনে হয়েছে। নারীরা বাসা, বাড়িতে বসে অনলাইনে পেইজ খুলে জামা-কাপড় বিক্রি করে পরিবার এবং দেশের জন্য অবদান রাখছে। নারীরা নিজের পরিবারকে সামলে চাকরির থেকেও বেশী উপার্জন করছে। নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার দ্বারা সমঅধিকারের থিওরিটাকে তারা পজিটিভভাবে ব্যবহার করছে।
*** অনেক অনেক অনলাইন ভিত্তিক পোশাক বিক্রয়কারী পেইজের মধ্যে “Tanum life style” পেইজটাও অন্যতম। এই পেইজটির স্বত্বাধিকারী ফারাহ আপু। তিনি ঢাবি থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন। অন্য অনেকের মত তিনিও নিজেকে স্বাধীন পেশাজীবি হিসেবে ভাবতে পছন্দ করেছেন এবং এই ভাবনা থেকেই “Tanum life style” এর আবির্ভাব।
তানুম এখন পর্যন্ত একটি পোশাক বিক্রয়কারী অনলাইন ভিত্তিক ই-বিজনেস হলেও ফারাহ আপুর ইচ্ছে আরো অনেক ক্ল্যাসিক আইটেম এড করার। ফারাহ আপু এই বিজনেসটিকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখছেন। পেইজটির পোস্ট এবং শপ সেকশন থেকে সমস্ত প্রোডাক্ট, প্রোডাক্টের বৈশিষ্ট্য এবং দাম দেখে নেয়া যাবে। পছন্দ হলে প্রোডাক্টের পেইজের ইনবক্স অথবা পেইজে দেয়া নাম্বারে কল করে অর্ডার করা যাবে।
.